শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
আব্দুর রহমান ঈশান- নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তরমুজ খেতে পানি জমে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমিতে পানি লেগে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রংছাতি, খারনৈ ও লেংগুরা ইউনিয়নের কয়েকশ কৃষক।
রংছাতি গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন, আজিজ মৌল্লা ও জহিরুল ইসলাম অনেক ধারদেনা করে এ বছর প্রায় আট একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। প্রতিটি গাছেই প্রায় তরমুজ ফলেছে। আর সপ্তাহ দেড়েক পরই তরমুজগুলো বিক্রির উপযোগী হতো।
কিন্তু গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে খেতে পানি জমে গেছে। তাই তরমুজের গাছগুলো মরে যাচ্ছে। তাদের দাবি এই তরমুজ খেতে তারা প্রায় আট লাখ টাকা খরচ করেছেন। এর মধ্যে সোয়া লাখ টাকা তাদের, বাকি টাকা ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন।
এ অবস্থায় কী করে ঋণ শোধ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হেলাল, আজিজ ও জহিরুল। বৃষ্টির পানিতে তরমুজ নষ্ট ও চারাগুলো না মরলে তারা অন্তত ১৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারতেন বলে জানান। শুধু তারাই নন, সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে উপজেলার কয়েক শত কৃষকের খেতের তরমুজ নষ্ট হতে চলেছে।
রংছাতি, সন্ন্যাসীপাড়া, ব্যাস্তপুর, গৌরীপুর, হাট গোবিন্দপুর, খারনৈ, রানীগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তরমুজ খেতে পানি জমে আছে। এতে খেতের তরমুজ নষ্ট ও গাছগুলো মরে যেতে শুরু করেছে। কোনো কোনো কৃষক বৃষ্টির পানি সরানোর জন্য খেতের মাঝখানে ছোট ছোট নালা তৈরি করে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ একর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করা হয়। তার মধ্যে রংছাতি ইউনিয়নেই প্রায় ৩০ একর।
কৃষক ইলিয়াস হোসেন বলেন- তিনি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। গত ডিসেম্বর মাসে বাড়িতে এসে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তিন একর জমিতে তরমুজের বীজ রোপণ করেন।
তার স্বপ্ন ছিল এই তরমুজ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধসহ গ্রামে একটি বাড়ি করবেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তরমুজ খেতে পানি জমে গাছগুলো মরে যায়। এতে বাড়ি তো দূরের কথা কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন এ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
কলমাকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন- কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে উপজেলায় তরমুজসহ রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ জানতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। উপজেলার মধ্যে রংছাতি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।